গ্রামের_ছেলের_সাথে_শহরের_মেয়ের_প্রেম
#গ্রামের_ছেলের_সাথে_শহরের_মেয়ের_প্রেম
#পর্ব_৩
#লেখক -: মো.নীল চৌধুরী
নিধির ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার পর চোখ খুলে দেখে শুভ্র নিধির মাথার সাথে মাথা লাগিয়ে ঘুমাচ্ছে তখন নিধি মাথা উঠিয়ে আস্তে করে শুভ্রর ঠোটে চুমু দিয়ে আবার শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরে।
শুভ্রর ঘুম ভাঙ্গার পর দেখে নিধি ওরে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। ঠিক বাচ্চাদের মতো শুয়ে আছে।
শুভ্র তখন নিধিকে ঘুম থেকে সজাগ করিয়ে দেওয়ার পর নিধি শুভ্রর চোখের সাথে চোখ পরে।
-নিধি(মিম)
-জি হ্যা(নিধি)
-এখন কি নামবি নাকি ঘুমিয়ে থাকবি?
-নামতাছি বলে ওরা তিনজন গাড়ি থেকে নামলো
-আপু মা-বাবা কোথায়?(নিধি)
-বাহিরে গেছে
-মিমের কানেকানে গিয়ে বলে) তার মানে আমাকে আর শুভ্রকে এই অবস্থায় দেখে ফেলছে?
-ওরা যখন বের হয় তখন আমি তোদের সামনে হয়ে দাড়িয়ে আড়াল করে ছিলাম তাই দেখতে পারিনি
-থ্যাংকস আপু
-ঘুম কেমন হলো?
-আমার জীবনের শ্রেষ্ট ঘুম আজ হলো
-তাই
-হ্যা আপু, সারাজীবন যদি ওর বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে পারতাম তাহলে আমার আর কিছু লাগতো না
-হুম পাগলি থাকতে পারবি
-আল্লাহ যেন তা-ই করে
-এখন তোরা আলাদা কোথায় ঘুরতে যা
-তুমি সাথে যাইবা না?
-না আমি গেলে তোদের ডিস্টার্ব হবে
-হবে না
-আরে পাগলি যা তো
-আচ্ছা
শুভ্র আর নিধি একটু হাটাহাটি করে এসে রিসোর্ট এর রুমে ঘুমিয়ে পরলো।
বিকালের দিকে নিধি শুভ্রর রুমে গিয়ে দেখে শুভ্র গভীর ঘুমে মগ্ন।
নিধি শুভ্রর মাথার কাছে বসে একটা কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিয়ে শুভ্রকে জাগায়।
নিধি আর শুভ্র বিকালের দিকে নদীর পারে হাটতে বের হয়।
-ভাইয়া তোমার কাছে নদী ভালো লাগে?(নিধি)
-হ্যা সবচেয়ে প্রিয়(শুভ্র)
-ওহ
-হুম যখন নদীর ঢেউ বয়ে যায় তখন বাধ্য হয়ে নদীর প্রেমে পরতে হয়।
-হুম আমারো নদীর পারে পারে হাটতে ভালো লাগে আর সাথে প্রিয় মানুষটা থাকলেতো আর কোন কথা ই নাই
-মানে
-কিছুনা ঐ দিকটায় চলেন
নদীর পারেই রাত হয়ে গেছে তাই অন্ধকার নেমে আসছে।আর চারদিকে লাইটের আলোতে নিধির কাছে নিজেকে ভিঞ্চির মোনালিসার মতো রোমান্টিক লাগছে।
নিধি অজান্তেই শুভ্রর হাতে হাত রাখা মাত্র শুভ্র দাড়িয়ে যায়।
-হাতে হাত ধরলা যে?
-আমার চশাম আনিনি তাই হাটতে প্রবলেম হচ্ছে
-ওহহ
-হ্যা, আপত্তি থাকলে ছেড়ে দিবো
-দরকার নেই
-কি দরকরা নাই?
-হাত ছাড়ার দরকার নেই
তখন নিধি আরো শক্ত করে ধরে। ওদের পাশ দিয়ে কতো কাপল যায়তাছে, নিধির ইচ্ছা হয়তাছে তাদের মতো শুভ্র ও নিধির কোমরে হাত রেখে হাটতে। নিধি মনে মনে ভাবে বিয়ে করে নেয়, তখন কুত্তাটা যদি এভাবে না ধরে তাহলে ওর একদিন কি আমার একদিন।
এভাবে হাটতে হাটতে রিসোর্টের সামনে এসে শুভ্র আলো দেখিয়ে হাত ছাড়িয়ে নেয়।
রিসোর্টে মিম আর নিধি এক রুমে থাকে।
-কিরে আজ কিছু হলো?(মিম)
-নাহ
-আজেকেও পারলিনা
-নাহ
-সোজাসুজি বলে দিলেই তো পারোছ
-আপু শুভ্র অন্যান্য ছেলেদের মতো না যে সুন্দর একটা মেয়ে প্রপোজ করলো আর ও সেটা মেনে নিবে। শুভ্র একটু বেশিই ডিফারেন্ট
-হুম বুঝলাম,যেভাবে ভালো হয় সেভাবেই কর
-হুম আপু
-এখন ঘুমিয়ে পর
রুমের লাইট অফ করে নিধি কোল বালিশকে জড়িয়ে ধরে বালিশ টাকে শুভ্র ভেবে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর চেষ্টা করতাছে।
কিন্তু এখন ঘুম আসছে না। ইশসস এখন যদি শুভ্র পাশে থাকতো তাহলে কতোই না রোমান্টিক কাহিনী ঘটতো।
শুভ্রর হাতটা আমার কোমরে রাখলে আমিও শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে শুয়ে পরতাম।
এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ ঘুমিয়ে পরলো।
নিধি সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করে শুভ্রর রুমে নক করে শুভ্রকে জাগিয়ে তুলে।
-গুড মর্নিং(নিধি)
-গুড মর্নিং
-ঘুম কেমন হলো?
-হ্যা ভালো,তোমার?
-আমারো
-আসো রুমে আসো
-হুম তারাতারি ফ্রেশ হয়ে আসো
ফ্রেশ হয়ে আসার পর দুজনে বাহিরে হাটার উদ্দেশ্য বের হলো তখন নিধির মা দেখে ওর বাবাকে বলল.....
-তোমার মেয়ের খবর রাখো?(নিধির মা)
-কি হয়ছে(নিধির বাবা)
-ঐ ছেলের সাথে ওর কি?
-কোন ছেলে?
-শুভ্র
-এমনি হয়তো হাটাহাটি করতে বের হয়ছে
-হাটাহাটি?
-হুম,আর তুমি সবকিছু নেগেটিভ নেও কেন?
-আমি নেগেটিভ নেয়?
-তো কি?
-তোমার মেয়েটা আস্ত বদমাশ
-কি বদমায়েশি করছে?
-ঐ যে ছেলেদের সাথে হাটাহাটি
-ছেলেদের মানে?
-শুভ্রর সাথে হাটেনা?
-তুমি যেভাবে বলতাছো যেনো নিধি ১২ টা ছেলের সাথে হাটাহাটি করছে, আর হ্যা শুভ্র ছেলেটা ভালো।তার সাথে আমার মেয়ে মিশলে খারাপ হবে না।
-তোমার মেয়েগুলো তো ধোয়া তুলশী পাতা
-হ্যা আমার মেয়ে ধোয়া তুলশী পাতাই
।
এভাবে ওদের মধ্যে প্রায়শই এমন হয়। সৎ মা হিসাবে যেমন থাকার কথা ঠিক তেমনি।
এভাবে ৫-৬ দিন থাকার পর ওরা বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দেয়।
বাসায় এসে নিধির আজ অনেক ভালো লাগতাছে কারন শুভ্রকে এই ছয়দিন তার কাছাকাছি রাখছে।
২-৩ দিন পর শুভ্র নিধিকে পড়াতে আসছে।
-তুমি কাজগুলো করছো তো?(শুভ্র)
-হ্যা করছি
-দেখাও
শুভ্র কাজগুলো দেখে, কিছু ভুল আছে সেগুলো ঠিক করো
-ওগুলো পারিনা
-আচ্ছা বসো আমি ওয়াশ-রুম থেকে আসছি এই বলে শুভ্র ওয়াশ-রুমের দিকে গেলো।
শুভ্র ওয়াশ-রুমে যাওয়ার পর ওর মোবাইলে প্রথম একটা মেসেজ আসছে,সাথে সাথে আরেকটা আসছে তাই নিধি মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখে একটা মেসেজ আসছে এরকম "বাবু কেমন আছো?"
এটা দেখে নিধির কান্না ........
.
চলবে.....
.
No comments