গ্রামের_ছেলের_সাথে_শহরের_মেয়ের_প্রেম

 


#গ্রামের_ছেলের_সাথে_শহরের_মেয়ের_প্রেম
#পর্ব_৪/শেষ পর্ব
#লেখক -: মো.নীল চৌধুরী
লেখক -: মো.নীল চৌধুরী
শুভ্র ওয়াশ রুমে যাওয়ার পর ওর মোবাইলে একটা মেসেজ আসছে, সাথে সাথে আরেকটা মেসেজ আসছে। একটা মেসেজ ছিলো এরকম "বাবু কেমন আছো?"
এটা দেখে নিধি শব্দ করে কান্না করে দেয়। নিধি তার মনকে বুঝাতে পারছেনা।
তাহলে কি শুভ্রর এই মেয়ের সাথে সম্পর্ক আছে?
না থাকলে বাবু কেন বলবে?
কান্না করতে করতে এসব ভাবতাছে তখনি শুভ্র সামনে এসে......
-এই তোমার কি হয়ছে?(শুভ্র)
-(শুভ্রর মোবাইল টা হাতে নিয়ে) এটা কি সত্যি(নিধি)
-এটার জন্য তুমি কেনো কান্না করতাছো?
-কারন আমি আপনাকে সেই প্রথমদিন থেকে ভালোবাসি আপনার সাথে আমি সারাজীবন থাকতে চাই।
-কি সব আবোলতাবোল বলতাছো?
-আবোলতাবোল না আমি সত্যি বলতাছি
-তুমি কোথায় আর আমি কোথায় সেটা কি জানো?
-হ্যা জানি, আপনার বাবার টাকা কম আর আমার বাবার কিছু টাকা বেশি
-শুধু টাকা না সব দিক দিয়ে আমাদের থেকে ভিন্ন
-আমি কোন কিছু জানিনা আমি আপনাকে চাই
-আমি পারবোনা
-কেনো পারবেননা
-এমনি
-আপনার কি আসলেই ঐ মেয়ের সাথে সম্পর্ক আছে?
-কোন মেয়ের সাথে?
-যে মেসেজ করছে
-এটা আমার চাচাতো বোন
-তাহলে বাবু বলল কেন?
-ও আমাকে অনেক আগে থেকেই পছন্দ করতো
-তার জন্য বাবু বলবে কেন?
বাবু বলবো শুধু আমি, আমি ছাড়া যে এসব নামে ডাকবে তাকে খুন করে ফেলবো।এই বলে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে।
-আরে কি করছো এসব?
-কিছুনা বলে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরছে তখন শুভ্র নিধিরে কষে থাপ্পর মারছে
-এই এটা বাস্তবতা, এটা কোনো কাল্পনিক মুভির জগত না। এই জীবনটা অনেক কষ্টের। রাস্তায় নামো তারপর বুঝতে পারবে
এই বলে শুভ্র রুম থেকে বের হয়ে যায়।
শুভ্র রুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে  ওর বাবার ঔষধের বক্স থেকে কতোগুলো ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে ফেলে।  কতক্ষণ পর মিম এসে দেখে নিধির অবস্থা খারাপ, মুখ দিয়ে ফেনা এসে রয়ছে।তখন মিম জোরে চিল্লানি দিয়ে কেদে দেয়। সবাই নিধিরে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নিধিরে হাসপাতালে রেখে মিম শুভ্রর হলে যায়। মিম শুভ্রকে দেখা মাত্র শুভ্রর গালে কয়েকটা জোরে জোরে থাপ্পর মারে। এই ক্ষেত তুই কি জানোছ না আমার বোনটা তোরে কত ভালোবাসে?
তুই নিধির সাথে কি করছিস বল?
নিধি কেন এসব করলো?
-নিধি কি করছে?
-নিধি বাবার ঔষধের বক্স থেকে সব ঔষধ খেয়ে ফেলছে
-কিহহ
-হ্যা যদি নিধির কিছু আল্লাহর কছম তোরে আমি ছাড়মুনা,তোর চৌদ্দগুষ্টি জেলে নিমু
-নিধি এখন কোথায়?
-নিধি হাসপাতালে

মিমের সাথে শুভ্র  হাসপাতালে যায়। ডক্টর ঐ হাসপাতাল থেকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে হেলিকাপ্টােরের মাধ্যমে অন্য হাসপাতালে পাঠায়ছে।তখন মিম আর শুভ্র আরো ভেঙ্গে পরে।
ঐ হাসপাতালে নেওয়ার পর....
-ডাক্তার সাহেব আমার মেয়ের কি অবস্থা?(নিধির বাবা)
-এখন কিছুই বলা যাচ্ছে না, আল্লাহ ডাকুন
-আমার নিধি বাচবে তো?
-ইনশাল্লাহ আশা করি আপনার মেয়ে আপনার বুকে ফিরে আসবে
-আল্লাহ যেনো তা ই করে


দুই দিন পর নিধির জ্ঞান ফিরে।
জ্ঞান ফেরার পর নিধি  সামনে ওর বাবা আর বোন মিমকে দেখতে পায় তখন নিধি কান্না করতে করতে বলে  আমাকে তোমরা বাচালে কেন?
আমি মরে যেতাম, আমি আমার মার সাথে গিয়ে থাকতাম।
-মা এখন চুপ কর(নিধির বাবা)
-বাবা তুমি একটু বাহিরে যাও(মিম)
-নিধি বল শুভ্র তোকে কি করছে?
-কিছু করে নাই
-কিছু না করলে এসব করলি কেন?
-আপু ওরে অনেক ভালোবাসি,যখন ঔষধ গুলো খেয়েছিলাম তখন গলাটা অনেক জ্বলছে তখন শুভ্রকে ভেবে কষ্ট গুলো আর আঘাত করতে পারে নাই
-শুভ্রকে সত্যিই তুই চাস?
-আমি চাইলেই হবে না, ওকে ওর চাচাতো বোন ভালেবাসে
-ভালোবাসতেই পারে কিন্তু শুভ্র কি ওরে ভালোবাসে?
-জানিনা
-না জেনে এসব কেন করতে গেলি? তোর কিছু হয়ে গেলে আমি কার ভরসায় বাচবো?
-আপু আমি শুভ্ররে ছাড়া কিছু ভাবতে পারি না
-তাহলে শুভ্রকে এনে দেই?
-ওরে এনে দিলে কি হবে? ও তো আমাকে ভালোবাসে না
-ভালোবাসে
-মানে?
-হুম শুভ্র এদিকে আসো এই বলে মিম নিধিকে বলে তোরা কথা বল আমি বাহিরে গেলাম।

শুভ্র রুমে আসার পর নিধির চোখ দিয়ে পানি আপনাআপনি বের হয়ে আসে।
-স্যরি(শুভ্র)
-কেন(নিধি)
-তোমার সাথে এমন ব্যাবহার করাতে
-আপনি কি আমাকে ভালোবাসেননা?
-ভালোবাসলেও কি?
-মানে?
-নিধি এই পৃথিবীটা অনেক কঠিন যেটা তুমি বুঝবানা
-আমি কিছু বুঝতে চাই না, আমি শুধু আপনাকে চাই, আর যদি ভালো না বাসেন তাহলে এরপরে গলায় ছুড়ি চালাবো
-থাপ্পর দিবো
-আমি আপনার থাপ্পর সারাজীবন চাই
-এসব কেন করতে গেলা?
-আপনি আমাকে ভালোবাসেননাই কেন?
-যদি বলি ভালোবাসি
-তাহলে এখন ই ভালো হয়ে যাবো
-পাগলি একটা
-হুম শুধু আপনার জন্য

৫ বছর পর..
-এই নীড়াকে রাখো আমি ওয়াশ রুমে যাচ্ছি(নিধি)
-ওকে যাও(শুভ্র)
হ্যা তাদের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় সেই ৫ বছর আগে।আজ শুভ্র মেজিস্ট্রেট। শুভ্র নিধি নীড়া আর মা-বাবাকে নিয়ে ওরা খুব ভালোই আছে।নীড়া ওদের কলিজার টুকরা,ওদের না শুধু এই পরিবারের কলিজার টুকরা।
-ভাইয়া ওকে আমার কোলে দেও(নিধি)
-কিহহহহ
-স্যরি ৫ বছর আগে ডেকে ডেকে অভ্যাস হয়ে গেছে
-হুম আর ডাকলে খবর আছে
-ভাইয়া কি করবা?
-তখন শুভ্র নিধিকে টান দিয়ে বুকে নিয়ে ঠোটে একটা মিষ্টি কামড় দিয়ে বলে সবসময় শুধু দুষ্টুমি তাই না?
-হুম আমার বরের সাথে আমি না করলে কে করবে শুনি?
-তুমিইতো করবা
-হুম বলে নিধি ও শুভ্রর ঠোটে ভালোবাসায় পরশ একে দেয়।
ভালো থাকুক ....................ভালোবাসা................

No comments

Powered by Blogger.